আজ শুক্রবার, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভোলা সদর হাসপাতালে চলছে বহিরাগত এ্যাম্বুলেন্স মালিকদের রমরমা ব্যবসা

ভোলা সদর হাসপাতালে চলছে

ভোলা সদর হাসপাতালে চলছেভোলা প্রতিনিধিঃ

অসুস্থ হলে, ধনী থেকে গরিব সবার প্রথমত আশ্রয়স্থল হচ্ছে সরকারি হাসপাতাল। সেই হাসপাতালে রয়েছে জরুরী রোগি পরিবহনকারী এম্বুলেন্স। আর সেই এম্বুলেন্স সেবা থেকে বিতারিত হচ্ছে ভোলা জেলাসহ সদর উপজেলার সাধারন নাগরিক। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ভোলা সদর হাসপাতালে দেওয়া হয়েছে মাত্র ২টি এম্বুলেন্স।

কিন্তু সরকারি হাসপাতালে সরকারি ভাবে দেওয়া এম্বুলেন্স থেকে কেন বিতারিত হচ্ছে ভোলার সাধারন জনগন। সরকারি এম্বুলেন্স সেবা পেতে ড্রাইভারদের ফোন করলে তা রিসিভড না করা ও ঠিকমত তাদের না পাওয়ার অভিযোগও তুলেছেন ভুক্তভুগি অনেক রোগি।

এ বিষয়ে খোজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে চাকুরি করা কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারী এই এম্বুলেন্স ব্যবসার সাথে জরিত, বহিরাগত এম্বুলেন্স ব্যবসায়ীদের সাথে তাল মিলিয়ে সদর হাসপাতালের ভিতরে চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা এম্বুলেন্স ব্যবসা। ফলে দিন দিন ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে সাধারন মানুষ।

সরকারি কর্মকর্তা ও বহিরাগত এম্বুলেন্স মালিকদের দখলদারিত্বের কারনে হাসপাতালে আসা রোগি ও আত্নীয় স্বজন প্রতিনিয়ত হয়রানীর শিকার হচ্ছে। চুরি, ছিনতাই থেকে শুরু করে নানা অপরাধমুলক কর্মকান্ডের শিকার হচ্ছে রোগিরা। গরিব মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রচুর অর্থ।

সরকার কতৃক নির্ধারিত এম্বুলেন্স ভাড়া ধার্য্য করে দেওয়া হলেও রোগিদের গুনতে হচ্ছে দ্বিগুন টাকা। পৌরসভার ভিতরে ২৫০ টাকা এবং পৌরসভার বাহিরে প্রতি কিলোমিটারে ২০ টাকা করে ভাড়া ধার্য্য করে দেওয়া হলেও সেটা মানতে নারাজ অসাধু ব্যবসায়ীরা। ফলে হাসপাতালে আসা ভুক্তভুগি রোগিরা নানা হয়রানীর শিকার হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোগিদের সেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতালের দক্ষিন পাশে প্রায় ৪০টি মালিকানাধীন এম্বুলেন্স পার্কিং করা আছে। কিন্তু সেখানে সরকারি এম্বুলেন্স ২টির উপস্থিতি চোখে না পড়ার মতই।

ভোলা সদর হাসপাতালে সরকারি এম্বুলেন্স ড্রাইভার ২ জন, একজন আবু বক্কর সিদ্দিক অপর একজন জাকির হোসেন মিলন। আবু বক্কর সিদ্দিকি এর ২টি মালিকানাধীন এম্বুলেন্স আছে, সরকারি এম্বুলেন্স চালানোর সাথে সাথে রোগিদের কাছে তার মালিকানাধীন এম্বুলেন্সের প্রচার প্রচারনা চালান। অপর ড্রাইভার জাকির হোসেন মিলনেরও ৩টি মালিকানাধীন এম্বুলেন্স রয়েছে যা ভোলা এম্বুলেন্স নামে পরিচিত।

ফিটনেছ বিহীন এই সমস্ত এম্বুলেন্সের ত্রুটির কোন শেষ নেই, রুট পারমিটের নেই কোন অনুমোদন, ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে শুরু করে নেই গাড়ির কোন কাগজ পত্র, এম্বুলেন্সে নেই রোগি বহন কারি কোন সরঞ্জাম। তাহলে কিভাবে তারা চালিয়ে যাচ্ছে এই অবৈদ ব্যবসা।

এ বিষয়ে ভোলা সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডঃ রথিন্দ্রনাথ মজুমদার জানান, সরকারি এম্বুলেন্স ড্রাইভারদের সতর্ক করে অবৈদ ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বহিরাগত ব্যবসায়িদের উদ্দেশ্যে উদ্ভেগ প্রকাশ করে বলেন, এরা স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে কতৃপক্ষের নিষেদাজ্ঞা অমান্য করে দীর্ঘ দিন যাবত এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। শীগ্রই জেলা প্রশাসকের আইন শৃংখলার মাসিক মিটিংয়ে বহিরাগত এম্বুলেন্স ব্যবসা উচ্ছেদের আইনুনাগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। পাশাপাশি তিনি প্রিন্ট ও মিডিয়া সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।

কবে শেষ হবে এই অবৈধ এম্বুলেন্স ব্যবসা, কবে সাধারন মানুষ শান্তিপুর্ন ভাবে হাসপাতালে এসে ভাল ভাবে কম খরচে সুন্দর ভাবে চিকিৎসা সেবা গ্রহন করতে পারবে, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।